ইরানে শুক্রবার রাতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে আরব দেশগুলোর বাধার মুখে পুরো শক্তি নিয়ে মাঠে নামতে পারেনি তেলআবিব। ওই দেশগুলো ইসরায়েলের সামনে শুধু দেয়ালই তুলে দেয়নি বরং ইরানে হামলার পর তেহরানের পাশেও দাঁড়িয়েছে তারা। মধ্যপ্রাচ্যে দুই পরাশক্তির এমন সংঘাতের ঘটনায় আরব দেশগুলো তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে অনেকটাই নীরব সৌদি আরব। তবে ইরানের ইস্যুতে চুপ থাকেনি রিয়াদ। ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর রীতিমতো ফুঁসে উঠেছে দেশটি। এমন হামলা তেহরানের সার্বভৌমত্ব এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলেও মন্তব্য করেছে সৌদি আরব। দুই দেশকে শান্ত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপও চেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। উত্তেজনা এড়াতে সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম বজায় রাখতেও জোরারোপ করেছে দেশটি। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে আমিরাত সরকার জানায়, উত্তেজনা প্রশমনে কূটনীতিক চ্যানেল অনুসরণই সবচেয়ে ভালো।
ওই হামলার পর বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনও। ইরানের সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের এমন হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছে তারা। এই হামলা ইরানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলেও উল্লেখ করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন। এ ধরনের উত্তেজনা এ অঞ্চলের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে বলেও জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠনটি।
মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে দিতে পারে এমন হামলা। আর তাই এর নিন্দা জানিয়েছে কাতার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা এড়াতে সবাইকে সংযম দেখানোর পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
জর্ডান জানিয়েছে, তারা দেশটির আকাশসীমায় কোনো সামরিক বিমান ঢুকতে দেয়নি। অর্থাৎ আঞ্চলিক এই সংঘাতে ইসরায়েল বা ইরান কারও পক্ষ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। তবে ইরানের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেছে সিরিয়া। দেশটি বলছে, সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জনগণের হেফাজতের জন্য ইরানের আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার রয়েছে।
আরব দেশগুলোর মধ্যে মিসরের সঙ্গেই সবচেয়ে বেশি মাখামাখি ইসরায়েলের। কিন্তু ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কায়রো। এই হামলার নিন্দা জানিয়ে দেশটি বলছে, এতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে।
চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলে প্রায় দুশ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় ইরান। ওই হামলায় ইসরায়েলের সামরিক ও তেল স্থাপনা টার্গেট করেছিল তেহরান। শনিবার ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ইরানের সামরিক স্থাপনা টার্গেট করা হয়। এমন পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর তাই ইরান ও ইসরায়েলকে থামাতে একজোট হয়েছে আরব দেশগুলো।
(তথ্য সূত্রঃ কালবেলা)